কীভাবে বুঝবেন আপনার সঙ্গী পরকীয়ায় আসক্ত কিনা ?
পরকীয়া (ইংরেজি: Adultery বা Extramarital affair বা Extramarital sex) হলো বিবাহিত কোনো ব্যক্তির (পুরুষ বা নারী) স্ত্রী বা স্বামী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহোত্তর বা বিবাহ বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক।
আপনার স্ত্রী / স্বামী কোনো পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়েছেন কী না কীভাবে বুঝবেন?
আসুন জেনে নেয়া যাক কী কী লক্ষনে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার স্ত্রী / স্বামী পরকীয়ায় আসক্ত কী না?
সঙ্গী যদি ফোন বা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েন: আপনার সঙ্গী ফোনের পেছনে কতটা সময় ব্যয় করছেন সেদিকে নজর রাখুন। একসঙ্গে বসে থেকে বা ঘুরতে গেলে যদি তিনি ফোন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন, মেসেজ বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করেন- তাহলে তা নিশ্চিতভাবে অন্য একটি সম্পর্কেরই ইঙ্গিত বহন করে।
এছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময়ে তাকে যদি ফোনালাপে ব্যস্ত পাওয়া যায় তাহলেও বিষয়টি লক্ষণীয়। অনেকে বলতে পারেন কাজের প্রয়োজনে মানুষ ফোন বেশি ব্যবহার করতেই পারে। কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখবেন, কাজের প্রয়োজনে ফোনালাপ এবং কারো সঙ্গে প্রেমময় ফোনালাপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং এই পার্থক্য বোঝার মত ক্ষমতাও বিবাহিত প্রত্যেক মানুষের থাকা উচিত। শুধুমাত্র ফোন নয়, ফেসবুক কিংবা অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যমের প্রতি আসক্তির মাত্রার ওপরও নজর দিন।
অকারণে রেগে যাওয়া: আরো একটি বিষয় আছে যা বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। তা হলো আপনার সঙ্গীর কথায় রাগের সুর। খেয়াল করে দেখুন তো, আগে যে বিষয়গুলো আপনার সঙ্গীর রাগের উদ্রেক করতো না সেসব বিষয়ে কী তিনি রেগে যাচ্ছেন? কিংবা কথায় কথায় আপনাদের দাম্পত্য জীবনকে অভিশাপ হিসেবে অভিহিত করছেণ? তার এসব কথার কোনো যুক্তি আছে কিনা এইসব ব্যাপারগুলো লক্ষ্য করুন। বিনা কারণে অযৌক্তিক রাগ করা, কিংবা সবসময় খিটখিট করা পরকীয়ার অন্যতম লক্ষণ।
তিনি যদি আপনার ও পরিবারের পেছনে কম সময় ব্যয় করেন: সঙ্গী যদি আপনাকে আগের চাইতে কম সময় দেয়া শুরু করেন, তাহলে এটিও একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। খুব ভালো করে আপনার সঙ্গীর প্রতিদিনকার কাজকর্ম লক্ষ্য করুন। যদি বুঝতে পারেন যে আগের চাইতে কম সময় পাচ্ছেন, তাহলে বোঝার চেষ্টা করুন সেই বাড়তি সময়টা তিনি কীভাবে ব্যয় করছেন?
নতুন কোনো নাম: আপনার সঙ্গীটির মুখে যদি নতুন কোনো একটি নাম কিংবা নতুন কোন ঘটনার কথা ঘন ঘন শুনতে পান, তবে একেও পরকীয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। সঙ্গীর যে বন্ধুটির কথা আগে কখনো শোনেননি, এমন কারো কথা শুনলে তাকে জিজ্ঞেস করুন এবং তার মুখের ভাব লক্ষ্য করুন। যদি তিনি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান, কিংবা তার মুখের অভিব্যক্তি বদলে যায় তবে বিষয়টি অবশ্যই ভেবে দেখবেন।
আপনার সঙ্গীর যৌনসম্পর্কে উদাসীনতা: সঙ্গী যদি আপনার সঙ্গে যৌনসম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন তাহলে আপনি এটি পরকীয়ার একটি লক্ষন হিসেবে ধরতে পারেন। যিনি অন্যের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আপনার প্রতি উদাসীন, তার মুখের অভিব্যক্তিই আপনাকে সব কথা বলে দেবে। আপনার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী নন, অর্থাৎ তার চাহিদাটি পূরণ হচ্ছে অন্য কারো মাধ্যমে। এছাড়াও অভ্যাস বশত যৌন সম্পর্ক করছেন কী না স্রেফ আপনাকে খুশি করতে, সেটিও লক্ষ্য রাখুন।
আপনার প্রতিদিনের রুটিন খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করা: এছাড়া খেয়াল করে দেখুন আপনার স্বামী/ স্ত্রী আপনার প্রতিদিনকার রুটিন সম্পর্কে হঠাৎ অতিরিক্ত নজর দিচ্ছেন কী না অর্থাৎ আপনি কটায় বাড়ি ফিরবেন বা কোন কোন জায়গায় কখন যাবেন এই ধরনের প্রশ্ন করছেন কিনা। যদি উত্তর হ্যা হয় তাহলে বিষয়টির দিকে নজর দিবেন।
তবে এসকল বিষয়ই যে আপনাকে একটি পরকীয়া সম্পর্কের নিশ্চিত প্রমান দেবে সেটা কিন্তু নয়। আপনাকে অবশ্যই বিষয়টি ভালবাবে গুরুত্ব দিতে হবে। কারন কাউকে কোন দোষ দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ন নিশ্চিত হতে হবে। আপনার মিথ্যা দোষারোপের কারনে কিন্তু আপনার সঙ্গী বিগরে যেতে পারে। আপনাদের দাম্পত্য জীবনটা বিষিয়ে উঠতে পারে। আমরা আশাকরি কেউ যেন পরকীয়ার মত এমন সম্পর্কে না জড়িয়ে না পরি।