আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেট নিউজ ২০২৩
Ireland Work Visa 2023
বাংলাদেশ থেকে বর্তমান সময়ে অনেক লোকজন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গমন করে। তবে এদের অধিকাংশ লোক মালয়েশিয়া ,দুবাই, মালদ্বীপ অথবা সিঙ্গাপুর গেলেও, আমাদের পরিচিত অনেক মানুষ আছেন যারা কাজ করার জন্য আয়ারল্যান্ড পছন্দ করেন।
আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা করার জন্য কি কি কাগজ প্রয়োজন ?
কোন কোন Documents গুলো প্রদান করতে হবে?
আয়ারল্যান্ডে ভিসা করার জন্য কত টাকা খরচ হবে ?
আমি এ সমস্ত বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। আশাকরি ধৈর্য সহকারে সাথেই থাকবেন। আমি নিম্নের তালিকা মোতাবেক আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
১| বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া যাবে কি?
২| কিভাবে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন?
৩| এখানে কোন কোন কাজের চাহিদা সব চেয়ে বেশি?
৪| আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা প্রসেসিং করতে কত টাকা খরচ হবে?
৫| আয়ারল্যান্ডে কাজের বেতন কেমন ?
৬| ভিসা আবেদন করার জন্য আপনার কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে?
৭| আয়ারল্যান্ডে Student ভিসার জন্য কত টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে?
৮| আপনি কেনো আয়ারল্যান্ডে যাবেন?
৯| আয়ারল্যান্ডে Student ভিসার জন্য IELTS প্রয়োজন হবে কিনা?
বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া যাবে কি?
আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা সম্পর্কে আমাদের বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা? আমি আপনাকে বলবো যে, আপনি অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের কোনো দূতাবাস না থাকার কারনে আমাদের জন্য এটি একটি সমস্যা। যে কারনে সরাসরি বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডের ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করা সম্ভব নয়। এই সমস্যার কারনে যারা বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান- তাদের কে ভারতের অ্যাম্বাসির মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করতে হবে এবং ভারত থেকে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করার পর আপনি আয়ারল্যান্ডে কাজের জন্য ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
২/আপনি কিভাবে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবে?
কিভাবে আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন?
এই ক্ষেত্রে আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির মাধ্যমে (“ভারত আয়ারল্যান্ড দূতাবাস”) থেকে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করতে পারবেন। অন্যদিকে আপনি যদি কোনো প্রকার এজেন্সির সাহায্য নিতে না চান। তাহলে আপনাকে সবার প্রথমে ভারতে যেতে হবে। তারপর আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস আর ভিসা ফি দিয়ে ভারত থেকে সরাসরি আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনাদের জন্য একটি সুখবর হলো বাংলাদেশীদের এই ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করার জন্য আয়ারল্যান্ড সরকার আশ্বাস দিয়েছে। যে তারা খুব দ্রুত আমাদের বাংলাদেশের সাথে ভিসা কার্যক্রম চালু করবে। আর যখন এই কার্যক্রম চালু হবে, তখন আমরা নিজের দেশ থেকেই আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবো।
বিদ্র: আপনি যদি ভারতে অবস্থিত Irish দূতাবাস সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য জানতে চান। তাহলে আপনি Online এর মাধ্যমে তাদের সকল প্রকার বিস্তারিত তথ্য গুলো খুব সহজে জেনে নিতে পারবেন।
এখানে কোন কোন কাজের চাহিদা সব চেয়ে বেশি?
প্রতিটি দেশে নির্দিষ্ট কিছু কাজের চাহিদা থাকে। ঠিক একই ভাবে আয়ারল্যান্ডের মধ্যেও এমন অনেক কাজ রয়েছে। যে কাজ গুলোর ব্যাপক পরিমাণ চাহিদা রয়েছে। আমি আপনাদের সুবিধার ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ডের মধ্যে চাহিদা সম্পন্ন সেই কাজ গুলোর নিচে তালিকা সহকারে দিলাম।
যেমন,
১.ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ
২.ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ
৩.প্রযুক্তি Releted কাজ
৪.পাইপ ফিটিং এর কাজ
৫.এসি মেরামত করার কাজ
৬.বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন এর কাজ
৭.হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর কাজ
৮.সাটারিং কার্পেটিং এর কাজ
৯.ড্রাইভিং এর কাজ
মূলত প্রবাসীদের জন্য আয়ারল্যান্ডের মধ্যে কোন কোন কাজ গুলোর চাহিদা বেশি রয়েছে। সেই কাজ গুলোর নাম উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তো আপনি যদি আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা পেতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনি আগে থেকেই উপরে উল্লেখিত যে কোন নির্দিষ্ট কাজে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন।
আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসা প্রসেসিং করতে কত টাকা খরচ হবে?
তবে সেই বিষয় গুলো জানার পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা প্রসেসিং খরচ সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের সঠিক ধারণা রাখতে হবে। এবং আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা প্রসেসিং এর খরচ কত হবে, সেটা নির্ভর করবে আপনি কিভাবে সেই ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তার উপর। কারন যদি আপনি ভারতের মধ্যে অবস্থিত আয়ারল্যান্ডের দূতাবাস থেকে ভিসার জন্য আবেদন করেন। সে ক্ষেত্রে আপনার ৪ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে। যদিও বা আপনার ভিসার ধরন অনুযায়ী এই টাকার পরিমাণ কিছু কম অথবা বেশি হতে পারে। অন্যদিকে আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করেন। তাহলে অবশ্যই আপনার আরও বেশি টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে। কারণ হলো এজেন্সি মাধ্যম ব্যবহার করে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করলে আপনার ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৭ লক্ষ বা তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ করার প্রয়োজন হতে পারে।
তাই আপনাদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে, আপনি যদি কম খরচে আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা পেতে চান। তাবে আপনি অবশ্যই ভারতের মধ্যে থাকা দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ করার চেষ্টা করবেন।তাহলে আপনার খরচ তুলনামূলক ভাবে অনেকটা কম পড়বে।
আয়ারল্যান্ডে কাজের বেতন কেমন ?
যখন আপনি কাজ করার লক্ষ্যে অন্য কোন দেশে যাবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যে, সেই দেশে কাজের বিনিময়ে কত টাকা পারিশ্রমিক (বেতন) পাওয়া সম্ভব। আর যেহেতু আপনি কাজ করার লক্ষ্যে আয়ারল্যান্ডে যেতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যে, আয়ারল্যান্ডে কাজের পারিশ্রমিক (বেতন) কত টাকা? আয়ারল্যান্ডের মধ্যে কাজের বেতন কত টাকা হবে, তা মূলত নির্ভর করবে আপনি কি ধরনের কাজ করছেন সেটর উপর। এর পাশাপাশি আপনার দৈনিক Duty Time কত ? আপনি Full Time কাজ করছেন নাকি Part Time কাজ করছেন? এই বিষয় গুলোর উপর নির্ভর করে আপনার বেতন নির্ধারণ করবে মালিক পক্ষ। স্বাভাবিক ভাবে আয়ারল্যান্ডের মধ্যে যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টার জন্য সর্বনিম্ন ১২ ইউরো থেকে ১৫ ইউরো পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে । যা বাংলাদেশী টাকার হিসাবে প্রতি ঘন্টায় ১৪৫০ থেকে ১৮০০ টাকা। তো আপনি যদি আয়ারল্যান্ডের মধ্যে Full Time হিসেবে কোন কাজ করেন। তাহলে আপনার প্রতি মাসের বেতনের পরিমাণ হবে বাংলাদেশী টাকায় ১ লক্ষ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এ গুলোর পাশাপাশি যদি আপনার কাজের performance ভালো থাকে, তাহলে আপনি এর থেকেও আরো বেশি বেতন এর সুযোগ নিতে পারবেন। তবে আমি আবারও বলছি যে, আয়ারল্যান্ডে কাজের বেতন কেমন হবে, সেটা মূলত আপনার কাজের ধরন এর উপর নির্ভর করবে।
ভিসা আবেদন করার জন্য আপনার কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে?
একটা বিষয় আমরা সকলেই বেশ ভালো করে জানি।আর সেই বিষয়টি হলো , যখন আমরা কোনো দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করে থাকি। তখন আমাদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ঠিক একই পদ্ধতিতে যখন আপনি কাজের ভিসার মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডে যেতে চাইবেন, তখন আপনার বেশ কিছু প্রয়োজনীয় Document এর দরকার পড়বে। আর সেগুলো হলো,
১.আপনার নিকট একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। আর সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ০৬ মাস হতে হবে।
২.আপনাকে অবশ্যই জাতীয়তা প্রমাণ করতে হবে। সেজন্য আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর কপি দিতে হবে।
৩.এই গুলোর পাশাপাশি আপনার সদ্য তোলা রঙ্গিন ছবি স্ক্যান করে দিতে হবে।
৪.যদি আপনার পূর্বে কোন কাজের অভিজ্ঞতা থাকে। তাহলে আপনার সেই কাজের সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
৫.এছাড়াও আপনাকে আপনার কাজের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট এর কপি জমা দিতে হবে।
সাধারণত আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসার জন্য প্রাথমিক ভাবে যে সকল Documents প্রদান করতে হয়। সেই Documents গুলোর তালিকা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আপনার কাজ এবং ভিসার ধরন এর উপর ভিত্তি করে আরো অন্যান্য Document এর প্রয়োজন হতে পারে।
আয়ারল্যান্ডে Student ভিসার জন্য কত টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে?
যদিও বা আজকের এই আর্টিকেল টি আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা নিয়ে লেখা হয়েছে। তবে আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন। যারা মূলত স্টুডেন্ট ভিসায় আয়ারল্যান্ডে যেতে চায়। আর আপনিও যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন। তাহলে একটা কথা আপনাকে জেনে রাখতে হবে। আর সেই বিষয়টি হলো, আয়ারল্যান্ডের মধ্যে শিক্ষার্থী ভিসায় যেতে হলে অবশ্যই আপনার ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার ব্যাংক Account এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেদে ন্যূনতম 7,000 EURO থেকে 10,000 EURO ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হবে। তবে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী এই অর্থের পরিমাণ কিছুটা কম অথবা বেশি হতে পারে।
Work permit visa Ireland 2023
আপনি কেনো আয়ারল্যান্ডে যাবেন?
এখন আমাদের অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে, আর সেই প্রশ্নটি হলো- পৃথিবীতে এত দেশ থাকতে আমরা কেনো আয়ারল্যান্ড যাবো? আর আপনার মনেও যদি এই একই ধরনের কোনো প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে আমি আপনাকে একটা কথা বলবো আর সেটি হলো অর্থনৈতিক দিক থেকে আয়ারল্যান্ড অনেক উন্নত একটি দেশ। আর এই দেশটি অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকটা উন্নত হওয়ার কারণে যারা এই দেশে গিয়ে কাজ করতে পারে, তারা অনেক উচ্চ পারিশ্রমিক এর সুবিধা ভোগ করতে পারেন। এছাড়াও কাজের দিক থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় আয়ারল্যান্ডে অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। তো আপনি যদি প্রবাস জীবনের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যের চাবিকাঠি বদলাতে চান তাহলে আয়ারল্যান্ড হবে আপনার জন্য উপযুক্ত একটি দেশ। আর এই কারণ গুলোর জন্যই আপনার আয়ারল্যান্ডে যাওয়া উচিত।
আয়ারল্যান্ডে Student ভিসার জন্য IELTS প্রয়োজন হবে কিনা?
বিশ্বের অন্যান্য দেশ গুলো তে প্রবেশ করার জন্য বাধ্যতামূলক আইইএলটিএস(IELTS) করতে হয়। অন্যদিকে আপনি যদি শিক্ষার্থী ভিসার মাধ্যমে আয়ারল্যান্ড যেতে চান। সেক্ষেত্রে আপনার জন্য আইইএলটিএস কোর্স বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজন পড়বে না।
কারন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে এমন অনেক ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যে গুলো তে পড়াশুনা করার জন্য আইইএলটিএস এর প্রয়োজন হয় না। তবে আয়ারল্যান্ডের মধ্যে এমন অনেক স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। যে গুলো তে পড়াশোনা করার জন্য আপনার আইইএলটিএস স্কোর এর প্রয়োজন হবে।
আর আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বলবো , আপনি যেহেতু বিদেশে পড়াশোনা করতে যাবেন। সেহেতু অবশ্যই আপনার আই ই এল টি এস কোর্স করা উচিত।