ফেসবুক পেজের প্রসার বাড়ানোর ৭টি উপায়:
বেশ কিছুদিন ধরেই হয়ত লক্ষ্য করছেন, আপনার ফেসবুক পেজটির প্রচার প্রসার মনমত হচ্ছে না। হয়ত আপনার কাছে অভিযোগও এসেছে, যে ভক্তরা হোমপেজে পাচ্ছে না আপনার পেজের পোস্ট। অথচ আপনি কিন্তু পেজ থেকে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। ফেসবুকে টাকা খরচ করে অ্যাড দিয়েও ফল পাচ্ছেন না। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
চলুন ফেসবুক মার্কেটিং এর খুঁটিনাটি জেনে নিই আজ!
গত বছর ফেসবুক তাদের অ্যালগরিদমে কিছুটা পরিবর্তন আনে। এর কারণে আপনার পেজের কোন পোস্ট আপনি যদি টাকা খরচ করে প্রমোট না করে থাকেন, তবে আপনার ভক্তদের প্রতি ১০০ জনে মাত্র ১৬ জন আপনার পোস্ট দেখবে। কষ্টের ব্যাপার হল বিগত কয়েকদিনে এর হার আরও কমে এখন মাত্র ৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে।
যেসব বড় প্রতিষ্ঠানের ফ্যানবেজ অনেক বড়, তাদের জন্য ব্যাপারটি সুবিধাজনক হলেও, স্বল্পসংখ্যক ফ্যানবেজ সমৃদ্ধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ফেসবুকের এই অ্যাড কতটা লাভজনক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। ফেসবুক তাদের অ্যাডের ব্যবসা লাভজনক করতে উঠেপড়ে লেগেছে। টাকা দিয়ে অ্যাড না কিনলে এখন পোস্টের প্রচার প্রসার হয়ে গেছে দুঃসাধ্য। কিন্তু এখানেও রয়েছে একটা সমস্যা। নতুন নিয়মে আপনার পেজের ভক্তসংখ্যা ৪০০ হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনি এই প্রচারসুবিধাটি নিতে পারবেন না। অতএব, আপনাকে প্রথমে পেজের ভক্ত বাড়ানোর জন্য খরচ করতে হবে, তারপর আবার তাদের কাছে পোস্ট পৌঁছে দেওয়ার জন্য পুনরায় খরচ করা লাগবে।
তাই নিজের বাজেট ঠিকভাবে বণ্টন করা লাগবে। আপনি যতটুকু প্রচার প্রসারের আশায় ফেসবুকে বিনিয়োগ করছেন সেটার আশানুরূপ ফলাফল নাই আসতে পারে। তাহলে কি ফেসবুক মার্কেটিং থেকে ভালো কিছু সম্ভব নয়?
না, সেটা ভাবাটা আসলে ভুল। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ ফেসবুকে মার্কেটিং থেকেও আপনাকে এনে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য! চলুন জেনে নিই এমন কিছু কৌশল সম্পর্কে।
কনটেন্ট নিয়ে কাজ করা:
আপনার পোস্ট কতটুকু ছড়াবে, তার অনেকটাই নির্ভর করবে পোস্টের গুণাগুণের ওপর। মানুষকে আকর্ষণ করার জন্য ভালো জ্ঞানসমৃদ্ধ কিন্তু সহজ পোস্টের বিকল্প নেই। তবে একটা ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে-কোনভাবেই যেন পোস্ট দেখে মনে না হয় যে এটা বিজ্ঞাপন। কনটেন্ট তৈরির সময়ে এ দুটো বিষয় খেয়াল রাখলেই আপনার পোস্ট হয়ে যেতে পারে জনপ্রিয়!
আপডেট নেবার জন্য ফলোয়ারদের উৎসাহ দেওয়াঃ
যখনই আপনার পেজের পোস্টগুলো মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে যাবে, কিংবা আপনার বিক্রি করা পণ্যটি হয়ত মানুষের বেশ পছন্দের, তখন আপনি তাকে চাইলে সাবস্ক্রাইব করার প্রস্তাব দিয়ে দেখতে পারেন।
কিছু পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করাঃ
পোস্টের ধরণ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাঃ
ধরুন আপনি সবসময় আপনার পেজে থেকে ভিডিও পোস্ট করে থাকেন। মাঝেমাঝে তাহলে ছবি শেয়ার করেই দেখুন কী হয়! কখন পোস্ট করছেন, কতজন দেখছে বা দেখবে এই হিসাবটা রাখাও জরুরি। আর কোন ছবি ভালো রিচ পেলো সেই ছবিটির সাইজ, ছবির কন্টেন্ট ও মাথায় রাখতে পারেন পরবর্তী যেকোন পোস্ট দেওয়ার সময়।
আপনার সবচেয়ে ভালো কিছু পণ্যকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার চালানোর চেষ্টা করে দেখতে পারেন। পেজের প্রত্যেকটা পোস্ট টাকা খরচ করে প্রচার করার চেষ্টা করাটা অর্থনৈতিক দিক থেকে ভালো কিছু হবেনা। তবুও, অন্তত কিছু পোস্ট প্রমোট করে দেখা উচিৎ কেমন কাজ করে।
ফেসবুক পেইজে আপনার অনলাইন স্টোরের লিংক দিয়ে দেওয়াঃ
ফেইসবুক পেইজে আপনি চাইলে আপনার অনলাইন স্টোরের লিংক দিয়ে দিতে পারেন। আপনার পেইজে লোকজন যখন আপনার প্রোডাক্ট খুঁজতে থাকে অনেক সময়ই তারা হারিয়ে যান। তাদের জন্য এই কাজটি সহজতর করতে আপনি চাইলে এই রকম নিচের ছবির মত অনলাইন স্টোর ট্যাব অ্যাড করে দিতে পারেন আপনার ফেসবুক পেইজ এ।
ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে প্রচারঃ
আজকালকার দিনে ফেসবুক গ্রুপ একটি অন্যতম আড্ডাস্থল। আপনি চাইলেই বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে আপনার পণ্য সম্পর্কে পোস্ট দিয়ে আরও মানুষকে সচেতন করে তোলে। সবচেয়ে ভালো হয়, আপনার পণ্য যে ধরনের, সে ধরনের পণ্যের গ্রুপে আপনার পণ্যের প্রচার চালানো। ভালো হয় যদি কোন প্রশ্ন করে অথবা সাধারণ কোন প্রোডাক্ট সম্বন্ধীয় আলোচনা দিয়ে ব্যবহারকারীদের কে এনগেজ করতে পারেন।
মোবাইলের উপর অত্যাধিক গুরুত্ব দেওয়াঃ
প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ফেসবুক মোবাইলে চালায়। তাই যেসব কনটেন্ট বা লিঙ্ক মোবাইলের জন্য বেশি উপযোগী সেগুলো নিঃসন্দেহে ভালো প্রচার পাবে। তাই পোস্ট প্রমোশনের সময় দেখে নিন সেটি ডেস্কটপ, মোবাইল বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কেমন দেখাবে।
তবে এসবকিছুর কোনটাই যদি আশানুরূপ ফল আপনাকে এনে দিতে না পারে তাহলে অন্য কোন প্ল্যাটফর্মে চেষ্টা করাটাই ভালো। গুগল+, পিন্টারেস্ট কিংবা ইনস্টাগ্রাম। আর নিতান্তই যদি ফেসবুকে করতে হয়, তবে খরচের প্রস্তুতি নিয়ে তবেই মাঠে নামা উচিৎ।